ব্যবসা করতে টাকার দরকার নেই। জেনে নিন -- অল্প মূলধন নিয়েই ব্যবসা করে লাভবান হওয়ার জন্য ৩৫ টি ব্যবসার আইডিয়া।
যে কোনো ব্যবসা শুরু করতে চাইলে সব থেকে বেশি দরকারি প্রচুর পরিমান টাকা, এই ধারণা প্রাচীনকাল থেকেই চলে এসেছে। আমরা সবাই মাঝে মাঝে শুনেছি যে যদি আমরা প্রচুর মূলধন সংগ্রহ করতে না পারি তবে আমাদের ব্যবসায় প্রবেশ সম্ভব হবে না।
সত্যিই কী তাই? নাকি অল্প অর্থের সাথে উদ্ভাবনী, দক্ষতা, শ্রম এবং সৃজনশীলতা দিয়ে ব্যবসা শুরু করা সম্ভব?
আজ আমরা এই জাতীয় ৩৫ টি ছোট মূলধন সহ লাভজনক ছোট ব্যবসার ধারণা দেব। আপনি আপনার পছন্দ, আগ্রহ এবং দক্ষতা অনুযায়ী এই ছোট ব্যবসাগুলির মধ্যে একটি বেছে নিয়ে কম অর্থের মধ্যে একটি লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আমরা ছোট মূলধনের সাথে ব্যবসা করার উপায়গুলির একটি তালিকাতৈরি করেছি। রয়েছে অনলাইন ব্যবসায়িক ধারণা থেকে শুরু করে প্রচলিত ছোট ব্যবসা সহ একটি ছোট মূলধন ব্যবসা শুরু করার বিভিন্ন উপায়।
অল্প টাকায় লাভজনক ৩৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
১. ফাস্টফুড ডেলিভারি (Fast Food Delivery) :-
ভোজনরসিক বাঙালিদের ভোজনচাহিদাকে তৃপ্ত করতে পারলে এই লাইনে ব্যবসার কোনও অভাব নেই। স্বল্প অর্থে ব্যবসা শুরু করতে, আপনার বাড়ি থেকেই ব্যবসার সূচনা করুন। এই ব্যবসার জন্য একটি রান্নাঘর, ভাল রাঁধুনি এবং সুস্বাদু রেসিপি প্রয়োজন।
এখন Zomato এবং Swiggy-এর যুগে আপনাকে আপনার ক্রেতাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে না। আপনার কাজ কেবল খাবার অর্ডার নেওয়া এবং অর্ডার অনুযায়ী খাবার তৈরী করা। তবে মনে রাখতে হবে, কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার খাবারের দোকান রয়েছে, তাই তাদের সঙ্গ মেলাতে হলে বা পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে আপনাকে আপনাদের খাবারের গুণমান ও স্বাদের উপর কড়া নজর রাখতে হবে এবং নতুন নতুন রেসিপির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। আপনি রান্নার বই বা ইউটুবে ভিডিও থেকে দেশে এবং বিদেশের বিভিন্ন রেসিপির ধারণা পেতে পারেন।
আরও পড়ুন - বিগিনারদের (Beginner) জন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলি সেরা?
২. ক্যাফে/কফিশপ (Cafe or Coffee Shop) :-
শহরতলী সহ মফস্বলের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাফে বা কফি শপের চাহিদা বাড়ছে। একটি সঠিক কৌশল এবং পরিকল্পনার সাথে চালাতে পারলে এটি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসাগুলির মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিত হতে পারে। অল্প অর্থের বিনিময়েই এই ব্যবসাটি শুরু করা সম্ভব।
এই ব্যবসার জন্য প্রয়োজন একটি ঘর, তার জন্য একটি ঝাঁ চকচকে এলাকায় আপনার বাড়িতে একটি গ্যারেজ বা একটি বাড়ি ভাড়া করে সেটাকে ক্যাফে-তে পরিণত করতে পারেন। আপনি যদি সঠিকভাবে প্রচার করতে পারলে আপনার ক্যাফে মাইন্ রোড থেকে একটু ভেতরে হলেও আপনি প্রচুর Customer পাবেন।
ক্যাফের অভ্যন্তরে দেখুন, ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার অন্যতম মূল চাবিকাঠি 'ল চোখ ধাঁধানো অভ্যন্তরীণ ডিসাইন (Interior Design) এবং আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা। সঠিকভাবে এবং সুন্দরভাবে সাজানো থাকলে ব্যয়বহুল চেয়ার টেবিল, কিছু বেতের মোড়ক বা বড় জলের পোস্টের কোনও প্রয়োজন নেই।
এছাড়াও খাবারের মেনুতে চমক রাখুন, খাবারের মধ্যবিত্ত দাম রাখুন। এক্ষেত্রেও আপনি খাবারের মেনুর জন্য বিদেশী রেসিপি দেখতে পাবেন। ঐতিহ্যবাহী দেশি, বিদেশী সব খাবার-ই রাখুনঃ সেই মেনুতে।
আপনি এর সাথে কফি মগ বা অন্যান্য আকর্ষণীয় খুচরা উপহারের আইটেম বিক্রির ব্যবস্থাও করতে পারেন। আপনি ক্রেতাদের বসে সময় কাটানোর জন্য কিছু বইও রাখতে পারেন। আপনি প্রতি উইকেন্ড-এ (Week-end) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ও ব্যবস্থা করতে পারেন।
আপনি যদি অল্প পরিমাণ অর্থ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান, এটি সঠিকভাবে পরিকল্পনা করুন এবং কাজে লেগে পড়ুন, সাফল্য আসতে নিশ্চিত।
আরও পড়ুন - অনলাইন টাকা ইনকাম সাইট। জেনে নিন কিছু অনলাইন ইনকামের ১০০% জেনুইন ওয়েবসাইটের বেপারে।
৩. ক্যাটারিং (Catering) :-
আরেকটি অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হল ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা। বিয়েবাড়ি,কোনো বড় অনুষ্ঠান,গৃহপ্রবেশ বা কোনো অফিসের বার্ষিক সম্মেলন, সব অনুষ্ঠানেই ক্যাটারিংয়ের উপস্থিতি যেন এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বড় শহর হোক বা গ্রাম মফস্বল, এখন প্রায় বেশিরভাগ অনুষ্টান-উৎসবেই ক্যাটারিংয়ের চাহিদা রয়েছে।
আপনি যদি অল্প অর্থের বিনিময়ে ব্যবসা শুরু করতে চান তবে আপনি এই ব্যবসার কথা ভাবতে পারেন। এই ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনার প্রথমেই যা দরকার তা হল একটি নির্ভরযোগ্য দল। সন্তোষজনক পরিষেবা এই ব্যবসার মূল মন্ত্র, তাই আপনার দলকে কঠোর পরিশ্রমী, ফুরফুরে মেজাজের এবং নির্ভরযোগ্য হতে হবে। আপনাকে প্রয়োজনীয় বাসনপত্র, গ্যাসের উনুন ইত্যাদি কিনতে হবে।
বর্তমানে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলো অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকে। সুতরাং আপনি যদি এক বা একাধিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার সাথে যুক্ত থাকেন বা সাইন আপ করেন তবে সহজেই ব্যবসা বাড়াতে পারবেন।
৪. ট্রাভেল আর ট্যুরিজম (Travel & Tourism) :-
ভোজনরসিকের সাথে সাথে বাঙালিরা ভ্রমণপিপাসুও বটে, তাই ট্যুর গাইড(Tour Guid) হয়ে মানুষকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া একটি কম খরচের লাভের ব্যবসা।
অল্প পরিমাণ অর্থের কোনো ব্যবসার কথা চিন্তা করলে এটি আপনার কাছে সবচেয়ে সহজ উপায় হতে পারে। এই ব্যবসা শুরু করতে খুব বেশি বিনিয়োগ লাগে না, শ্রম, অধ্যবসায় এবং ভ্রমণের আবেগ লাগে। টিকিট, হোটেল বুকিং, ভ্রমণের পরিকল্পনা ইত্যাদির ঝলকানি এড়াতে অনেকে বিভিন্ন সংস্থার উপর নির্ভর করে। পরিষেবা সন্তোষজনক হলে ভ্রমণপিপাসু লোকের অভাব হবে না।
এই ব্যবসা শুরু করতে, আপনাকে প্রথমে যাওয়ার জায়গাটি ঠিক করে নিতে হবে। আপনি কোন ধরণের জায়গায় আপনার ক্লায়েন্টদের নিয়ে যেতে চান, তাদের কোন ধরণের হোটেল এ রাখতে চান? সব কিছুই আগে থেকে ভেবে নিতে হবে আপনাকে। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থার মানুষের চাহিদা আলাদা, আপনি কাকে সেবা করতে চান তা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এই ব্যবসায় বিনিয়োগ ছাড়াই উপার্জন করা সম্ভব। নতুন নতুন জায়গা যেখানকার ব্যাপারে বেশি লোক জানে না আপনি সেগুলি খুঁজে পেলে আপনার ব্যবসা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি জনপ্রিয় পর্যটন স্থানগুলিকেও তালিকায় রাখুন। সেই জায়গাগুলিতে হোটেলগুলির সাথে কথা বলুন এবং সিদ্ধান্ত নিন যে তারা কত শতাংশ ছাড় বা এজেন্ট কমিশন দিতে প্রস্তুত।
পাশাপাশিই বেড়াতে নিয়ে গিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা কী করবেন সেই নিয়েও ভাবনাচিন্তা করুন। হোটেলের খাবার না নিয়ে নিজেরা খাবার ব্যবস্থা করলে লাভ বেশি হবে। সেইমতো জোগাড়যন্ত্র করে এগোন।
৫. রেল ও বিমানের টিকিট বুকিং (Rail & Airline Ticket Booking) :-
অনলাইনে টিকিট বুক করার সুবিধা থাকলেও নানান কারণে যাত্রীদের প্রায়শই টিকিট পেতে সমস্যা হয়। দূরপাল্লার ট্রেনে রিজার্ভেশন পাওয়া নিয়ে যাত্রীদের নাজেহাল হতে হয়। এইজন্য তারা প্রায়শই বুকিং এজেন্টদের দ্বারস্থ হন।
এজেন্ট হওয়ার জন্য রেল বা বিমান কর্তৃপক্ষকে কিছু টাকা দিতে হয় তাহলেই পাওয়া যায় সুযোগ। বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে নিলে নিয়মিত ব্যবসা পাওয়া সম্ভব। উপরন্তু, অন্যান্য সংস্থাগুলির সাথে চুক্তি করা যেতে পারে যাতে সেই সংস্থার কর্মচারীদের অফিসের কাজে বাইরে যেতে হলে তাদের টিকিট বুকিং এর যাবতীয় দায়িত্ব যেন আপনি পান।
অনেক কোম্পানিতে, কর্মচারীদের নিয়মিত শহর বা দেশের বাইরে যেতে হয় এবং এই পরিষেবার জন্য কোম্পানির নিজস্ব কোনো সদস্য না থাকায় কোম্পানি বাধ্য হয় বাইরের এজেন্টের উপর নির্ভর করে টিকিট-বুক করতে। এই ব্যবসায় লাভ করতে, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় টিকিট বুক করতে পারেন। আপনি যদি তা করেন তবে অতি সহজেই ক্রেতাদের বিশ্বেস অর্জন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন - বিগিনার (Beginner) দেড় জন্য ১১০+ টি নতুন ফ্রীলান্সিং আইডিয়া
৬. ট্রেকিং এজেন্সি ও ট্রেকিং গিয়ার ভাড়া :-
এখন লোকেদের মধ্যে বিশেষ করে যুবক-যুবতীদের মধ্যে পাহাড়ে ঘুরতে এবং ট্র্যাকিং করতে যাওয়ার চাহিদা সবচেয়ে বেশি, এটা এখন একটা ফ্যাশন এর মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এটি মূলত একটি ভ্রমণ সংস্থা, কিন্তু এই ব্যবসার ধরন, গ্রাহক, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ইত্যাদি খুব আলাদা। আপনার নিজের পর্যাপ্ত ট্রেকিং অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা থাকলে তবেই এই ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবুন। সেই সাথে পাহাড়ের প্রতি ভালবাসা এবং আবেগও থাকতে হবে।
ট্রেকিং এজেন্সিগুলিও একটি ছোট মূলধনের লাভজনক ব্যবসা। কারণ অনেকেই এখন ট্রেকিং এর জন্য এজেন্সির উপর নির্ভর করে।
এই ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনাকে বিভিন্ন ট্রেকিং রুটের হালহকিকত জানতে হবে। আপনাকে স্থানীয় গাইড এবং অন্যান্য লোকদের সাথে চেনা-জানা থাকতে হবে। এই ব্যবসা আপনি আপনার বন্ধু এবং পরিচিতদের নিয়ে শুরু করতে পারেন। প্রথমে পুরো বিষয়টি সময় নিয়ে ভাবুন এবং প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করে নিয়ে তার পর এই ব্যবসায় নামুন।
একবার ট্রেক শুরু করলে, আপনি কোনও ভুল সংশোধন করার সুযোগ পাবেন না। এর ফলে, যাত্রা শুরু হওয়ার আগে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর যথাযথ যত্ন নিতে সক্ষম। এই ক্ষেত্রে সামান্য অসাবধানতা মারাত্মক প্রমাণিত হতে পারে।
আপনি ট্রেকিংয়ে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি এবং ভাড়া দেওয়ার ব্যবসাও শুরু করতে পারেন। ট্রেকারদের তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, গদি সহ একাধিক আইটেম প্রয়োজন, এবং বেশিরভাগই বছরে একবার না কিনে সেগুলি ভাড়া দেওয়া সহজ এবং কমখরচের বলে মনে করেন।
আপনি অল্প পরিমাণ মূলধনের মধ্যেই কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেন, তারপর সেগুলি নিজের এজেন্সির কাজে ব্যবহার করতে পারেন বা অন্য ট্রেকারদের ভাড়া দিতে পারেন । এছাড়াও, আপনি যদি ট্রেকিং জুতা, জ্যাকেট, রুকস্যাক ইত্যাদি তৈরি এবং বিক্রি করতে পারেন, তবে এটি একটি লাভজনক ব্যবসাও হতে পারে।
আরও পড়ুন - ওজন কমাতে কত দিন সময় লাগে? কত দিনে আপনি আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবেন? ওজন কমাতে কি করতে হবে ?
৭. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (Event Management) :-
ছোট-বড় বিভিন্ন সংস্থা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলিকে তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনের দায়িত্ব দিয়ে থাকে। খুব অল্প অর্থের বিনিময়ে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
এই ব্যবসার জন্য দক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম এবং যোগাযোগ গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন। যদি আপনি আপনার সংস্থার কাজের মাধ্যমে আপনার ক্রেতাদের বিশ্বাস আদায় করতে পারলে তবেই আপনি নতুন নতুন ক্রেতার কাছ থেকে কাজ পাবেন।
ছোট ছোট ইভেন্টস বা অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু করুন এবং তারপরে ধীরে ধীরে নতুন যোগাযোগ তৈরি করে ব্যবসা বাড়ান। আপনি কোন ধরণের ইভেন্ট সংগঠিত করতে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তা সনাক্ত করুন এবং সেই অনুযায়ী সংস্থাগুলির সাথে যোগাযোগ করুন।
৮. ব্লগ লেখা (Blog Writing) :-
ব্লগ লেখা বাড়িতে বসে ব্যবসা করার আরেকটি সহজ উপায়। গত এক দশকে এই ব্যবসা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
এই ব্যবসার জন্য আপনাকে প্রথম যে জিনিসটি বেছে নিতে হবে তা হল আপনার Niche বা আপনার পছন্দের বিষয়। সময়ের সাথে সাথে অচল হয়ে যাবে না এমন বিষয়গুলি বেছে নিন। আপনার অবশ্যই এই বিষয়ে জ্ঞান এবং আগ্রহ থাকতে হবে, অন্যথায় বেশিদিন ব্লগ বানানো চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
পাশাপাশি আপনি যে ভাষায় ব্লগ লিখগবেন সেই ভাষার ওপর আপনার দখল ও দক্ষতাও থাকা দরকার। ইংরেজি ভাষায় স্বাভাবিকভাবেই সর্বাধিক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব, কিন্তু আঞ্চলিক ভাষার ব্লগের চাহিদাও বাড়ছে। অনেকেই অনলাইনে মাতৃভাষায় পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন।
আপনি ব্লগের মাধ্যমে কোন পাঠকের কাছে পৌঁছাতে চান সে সম্পর্কে আপনার অবশ্যই একটি স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। ব্লগের ভাষার ধরন এবং লেখার ধরন এর উপর নির্ভর করবে আপনার ব্লগের পপুলারিটি।
একটি ব্লগ তৈরি করার পর, কিভাবে এটি থেকে অর্থ উপার্জন করা যায় তা সিদ্ধান্ত নিন। আপনি ব্লগের মাধ্যমে গুগল এডস (Google Ads) বা এফিলিয়েট মার্কেটিং করেও টাকা ইনকাম করতে পারেন। এছাড়াও আপনি অন্য কোনো কোম্পানির Ads এর আপনার ব্লগে দেখতে পারেন অর্থাৎ বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দেবেন, তার বিনিময়ে আপনি অর্থ পাবেন। আয় নির্ভর করে আপনার ব্লগের ট্রাফিকের ওপর। নিয়মিত নতুন নতুন বিষয়ের ওপর লিখতে থাকুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার বন্ধু বা ফলোয়ারদের মধ্যে আপনার লেখা গুলি ছড়িয়ে দিন, ধীরে ধীরে বাড়বে পাঠকের সংখ্যা। আর পাঠকের সংখ্যা যত বেশি হবে, বিজ্ঞাপন থেকে আয়ও ততই বেশি হবে।
৯. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট (Social Media Management) :-
সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কোম্পানি গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ এবং বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করছে। এবং এই উদ্দেশ্যে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনের কাজ সামলাতে দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংস্থাগুলি কোনো পারমানেন্ট কর্মচারী নিয়োগ না করে এই কাজের জন্য বাইরের সংস্থা বা কর্মীদের উপর নির্ভর করে থাকে। সুতরাং আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলিং-এ যথেষ্ট দক্ষ্য হন তবে আপনি বাড়িতে বসেই বিভিন্ন সংস্থানের সোশ্যাল মিডিয়া গুলি হ্যান্ডেল করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন - মুখের ব্রণ দূর করুন খুন সহজ উপায়ে
১০. ওয়েব ডিজাইনিং (Web Designing) :-
ইন্টারনেট সম্প্রসারণের সাথে সাথে ডোমেইন এবং হোস্টিং পরিষেবারও চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় সব কোম্পানির -ই নিজেস্ব অনলাইন ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়েবসাইট তৈরি থেকে ওয়েবসাইট ডিজাইন এইসব কাজে কোম্পানিগুলি সাধারণত বাইরের সংস্থাগুলির উপর নির্ভর করে। এই কাজ আপনার জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই বাড়িতে বসে বসেই টাকা যায় করতে পারবেন।
১১. অনুবাদের ব্যবসা (Translation) :-
মিডিয়া এবং বিনোদনের জগৎ থেকে শুরু করে সরকারী নথি, সর্বত্র অনুবাদকদের প্রয়োজন। আপনার যদি কমপক্ষে দুটি ভাষায় (আপনার Regional Language এবং English) যথেষ্ট দক্ষতা থাকে তবে আপনি এই কাজটি পেতে পারেন। আপনি যদি অন্য কোনো ভাষার অনুবাদকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এবং একটি দল তৈরি করতে পারেন তবে আপনি একটি এজেন্সিও খুলতে পারেন।
অনুবাদ এবং ইন্টারপ্রিটেশন ইন্টারনেটে ব্যবসা করার একটি সহজ উপায়। আপনি অনলাইনেই কাজের সন্ধান পেয়ে যাবেন। আপনি যদি অন্য কোন বিদেশী ভাষা জানেন, আপনি অতিরিক্ত সুযোগ পেতে পারেন, কিন্তু মনে রাখবেন যে বিশ্বের বিভিন্ন অনুবাদ সংস্থা সাধারণত তাদের মাতৃভাষার মতো একই দখল রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাথে অনুবাদ করতে চায় যাতে অনুবাদটি নির্ভুল এবং আকৃষ্টজনক হয়। আপনি যদি কোনও বিদেশি ভাষায় অনুবাদ করতে চান, তাহলে সেই ভাষায় আপনার দখ্যতা থাকা প্রয়োজন অন্যথায় আপনি সেই ভাসতে কোনো লাইন অনুবাদ করতে সখ্যম হলেও সেই লাইন টি আকর্ষণীয় বা সহজবোধ্য হবে না।
অনুবাদকের জব পাওয়ার জন্য কিছু ওয়েবসাইট এর লিংক দেওয়া হলো --
1. https://gengo.com/translators/
2. https://www.upwork.com/freelance-jobs/translation/
3. https://www.stepes.com/translation-jobs/
4. https://www.naukri.com/translator-jobs
১২. লেখা ও সম্পাদনা (Writing, Proofreading & Editing) :-
আপনার কোনো ভাষায় দক্ষতা থাকলে আপনি সেই ভাষায় লেখা ও সম্পাদনা করে অনলাইন ইনকাম করতে পারেন।
বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রতিদিন শত শত নিবন্ধ লেখা হয়। এই নিবন্ধের জন্য কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কৌশলগুলি আয়ত্ত করতে হবে যাতে আপনার লেখা বা ওয়েবসাইট-টি সার্চ ইঞ্জিনে প্রথমে আসে। অনলাইনে আরও বিভিন্ন লেখার কাজ পাওয়া সম্ভব। সম্পাদনা এবং প্রুফ রিডিং-এর কাজও উপলব্ধ রয়েছে অনলাইনে।
১৩. ইউটিউব চ্যানেল (YouTube Channel) :-
অনলাইনে ব্যবসার আরও একটি সহজ এবং এখনকার সব থেকে জনপ্রিয় উপায় হল ইউটিউব চ্যানেল। আপনি আপনার পছন্দমতো যে কোনো বিষয়ের ওপর ভিডিও বানিয়ে ইউটুবে উপলোড করতে পারেন। রান্না শেখানো থেকে শুরু করে, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, গান থেকে শুরু করে দৈনন্দিনের টোটকা, আপনার আগ্রহের যে কোনও বিষয় নিয়েই আপনি ভিডিও বানাতে পারেন।
যদি যথেষ্ট সংখ্যক দর্শক আপনার চ্যানেল বা আপলোড করা ভিডিওগুলো দেখে তাহলে আপনার ভিডিওতে যে বিজ্ঞাপনগুলি দেখানো হবে তার জন্য আপনি টাকা পাবেন। তবে ভিডিওতে View-এর সংখ্য বাড়াতে আপনাকে রেগুলার (নিয়মিত) এবং ক্রিয়েটিভ ভিডিও পোস্ট করতে হবে যাতে দর্শক অন্যান্য চ্যানেল বাদ দিয়ে আপনার চ্যানেল দেখে। ভিডিওর গুণমানের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
১৪. হস্তশিল্পের ব্যবসা (Handicraft) :-
বাংলায় রয়েছে হস্তশিল্পের বিপুল সম্ভার। বিকনা আর দরিয়াপুরের ডোকরা, পিঙ্গলার পটচিত্র, নতুনগ্রামের পেঁচা, ঘুর্ণির মাটির পুতুল, মেদিনীপুরের মাদুর, কুচবিহারের শীতলপাটি. চুড়িদার, ছৌ মুখোশ রয়েছে হাজারো রকমের হস্তশিল্প। দেশ বিদেশের বাজারে এর যথেষ্ট চাহিদাও রয়েছে। নিজেদের দখ্যতা এবং উদ্ভাবনী ভাবনা দিয়ে নানান রকম নিত্য নতুন জিনিস বানাচ্ছে হস্তশিল্পীরা। আপনি তাদের থেকে এই সব হস্তশিল্পের জিনিসগুলি কিনে নিয়ে সেগুলিকে অনলাইনে বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।
স্বল্প টাকায় ব্যবসা শুরু করতে, শিল্পীদের কাছ থেকে বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী সংগ্রহ করুন। আপনি আপনার নিজের নকশা দিয়েও জিনিসগুলি তৈরি করতে পারেন।
১৫. গয়না বানানোর ব্যবসা (Jewelry Handicraft) :-
এখন মহিলারা তাদের সৌন্দর্য নিয়ে খুবই সচেতন। এই সুযোগে অল্প পুঁজিতে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা হল গয়না বিক্রি। কিন্তু এই ব্যবসার জন্য জানতে হবে হাতের কাজ সেই সঙ্গে এই শিল্পে দক্ষতাও থাকতে হবে। নানা উপাদানগুলি জোগাড় করে আপনি নিজেই নতুন নতুন ডিসাইনের সুন্দর সুন্দর আধুনিক ও আকর্ষণীয় গয়না বানিয়ে ফেলতে পারেন। খুব কম খরচে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব এই উপায়ে।এইভাবে খুব কম খরচে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব।আপনি অনলাইনে গহনা বিক্রি করতে পারেন।
আপনি আপনার পরিচিতদের কাছে বিক্রি করেও আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন মেলা এবং প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে পারেন। সাধারণ মানুষের ধরা-ছোয়ার মধ্যে কম দামে আকর্ষণীয় নকশা আপনার কালেকশনে থাকলে সেগুলি দ্রুত বিক্রি হবে।
১৬. অনলাইনে শাড়ি বিক্রি (Online Saree) :-
বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা বাড়িতে বসেই ছোট্ট একটি দোকান খুলে শাড়ি বিক্রির ব্যবসা দীর্ঘদিনের। মহিলারা অল্প কিছু শাড়ি কিনে বাড়িতেই একটি ছোট্ট দোকান খুলে শাড়ী বিক্রি করতে পারেন, এতে তাদের কিছু হাত খরচও আসবে এবং মহিলারা সাবলম্বীও হয়ে উঠবেন। সহজ কিস্তিতে টাকা দেওয়া, হাতের নাগালে সহজেই পছন্দ মতো শাড়ি পেয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে কর্মরতা ব্যস্ত মহিলারা অনেক সময়ই নির্ভর করতেন এই শাড়ি বিক্রেতাদের ওপর। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই ব্যবসারই খানিক আধুনিকীকরণ হয়েছে। শুধুমাত্র ফেসবুক বিজনেস ব্যবহার করেই কম খরচে লাভের ব্যবসা করছেন অনেকে।
বাংলাদেশের ঢাকাই থেকে লক্ষ্ণৌয়ের চিকন, বিভিন্ন জায়গা থেকে শাড়ি আনিয়ে অনলাইনে বিক্রি করে রমরম করে চলছে ব্যবসা। সঠিক পছন্দ আর ঠিক মতো ক্রেতার কাছে পৌঁছতে পারলে আপনিও খুব সহজেই অল্প টাকায় ব্যবসা করতে পারবেন।
১৭. পোশাক তৈরি ও দর্জির কাজ (Tailoring) :-
আশেপাশের দর্জির দোকানগুলি একটি পুরানো ব্যবসা। অভিনব কাট এবং পোশাকের নতুন ডিজাইন করতে পারলে তার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রচলিত নকশার পাশাপাশি উদ্ভাবনী বা ক্রিয়েটিভ নকশা তৈরি করুন। অতিরিক্ত মূল্যের বিনিময়ে দ্রুত কাপড় সেলাই করে দিতে পারলে ব্যবসা বাড়বে।
আপনি যদি অল্প অর্থের বিনিময়ে ব্যবসা করতে চান তবে আপনি আপনার বাড়ি থেকে এই ব্যবসা করতে পারেন। পরিমাপ এবং বিতরণ করার জন্য বাড়ি বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা (Home Service) করুন।
১৮. বুটিক ও অনলাইনে পোশাক বিক্রি (Boutique) :-
বেশিরভাগ ক্রেতা প্রচলিত ডিসাইন বা নকশার পোশাকের বাইরে গিয়ে নতুন নতুন ডিসাইনের পোশাক কিনতে পছন্দ করে। এই সমস্ত ক্রেতারা এর জন্য বেশি মূল্য দিতেও ইচ্ছুক। এই ক্রেতাদের চাহিদা পূরণের জন্য একাধিক বুটিক তৈরি করা হচ্ছে। এই ব্যবসার চ্যালেঞ্জ হল ক্রেতার পছন্দ বুঝে তাদের চাহিদামতো ডিসাইনের পোশাক তৈরী করা। যদি দোকান বানানো বা ভাড়া দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে আপনি এই নতুন ডিসাইনের পোশাক অনলাইনেও বিক্রি করতে পারেন।
আরও পড়ুন - বিগিনার (Beginner) দেড় জন্য ১১০+ টি নতুন ফ্রীলান্সিং আইডিয়া
১৯. গৃহশিক্ষক ও কোচিং সেন্টার (Home Tuition & Coaching Centre) :-
প্রায় প্রত্যেকেরই শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে একজন গৃহশিক্ষকের প্রয়োজন। এই ব্যবসায় কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই উপার্জন করা সম্ভব।
আপনি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে সেটির মধ্যে দিয়ে টিউশন টিচারদের সাথে স্টুডেন্টদের যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। টিউটররা তাদের নাম, ঠিকানা, বিষয়, দক্ষতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ দরকারি ডকুমেন্টসগুলি আপনার ওয়েবসাইটে পোস্ট করবে। শিক্ষার্থী এবং তাদের বাবা-মা তাদের প্রয়োজন ও চাহিদাগুলি আপনার ওয়েবসাইটে জানাবেন। এবং আপনার সংস্থা বা ওয়েবসাইট-টি দুজনের মধ্যে একটি সেতুর কাজ করবে।
এছাড়াও আপনি একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে একটি কোচিং সেন্টারও খুলতে পারেন। উপযুক্ত ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ করা হলে সাধারণভাবেই শিক্ষার্থীরা আসবে।
২০. অনলাইন শিক্ষকতা (Online Tutor) :-
অনলাইন শিক্ষাদান বাড়িতে উপার্জনের অন্যতম কার্যকর উপায়। এই কোরোনার সময়ে অনলাইন টিচিং খুবই জনপ্রিয় হয়েছে।আপনি আপনার একটি উটুবে চ্যানেল খুলে বা কোনো অঁলিন্যে কোর্সের মধ্যে দিয়ে আপনি যেমন অধ্যয়নের একটি নির্দিষ্ট কোর্স করতে পারেন, তেমনি গিটার শেখানো, যোগব্যায়ামের ব্যয় শেখানো বা বিদেশী ভাষা শেখানো ইত্যাদির মতো আপনার পছন্দমতো কাজ আপনি শেখাতে পারেন।
২১. কাস্টমাইজড গিফ্ট বিক্রি (Customized Gifts) :-
আপনি ফটোফ্রেম, টি-শার্ট এবং কফিমগের ওপর নতুন ধরণের সাব-হ্যান্ড (Sub-Hand) আইটেমগুলির কথা ভাবতে পারেন। ক্রেতার পছন্দমতো সাজিয়ে আপনি এগুলিকে ভারী দামে বিক্রি করতে পারেন। আপনি এগুলি নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারেন বা একটি ছোট দোকান বানিয়েও বিক্রি করতে পারেন। এই সব সৌখিন জিনিস চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই কম মূলধন ব্যবসা থেকে আপনি ভালো মুনাফা হাসিল করতে পারেন।
২২. বেকারি (Bakery) :-
বাজারে, বাড়িতে তৈরি তাজা কেক, পেস্ট্রি এবং কুকিজের চাহিদা রয়েছে। কনফেকশনারি দোকানের বাইরে ঘরের উনুনে তৈরি বেকারি আইটেমগুলির স্বাদ একদমই আলাদা। আপনি যদি ভাল কেক তৈরি করতে পারেন, নতুন স্বাদের কুকিজ তৈরি করতে পারেন, জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকী কেক তৈরি করতে ও সাজাতে জানেন, তাহলে আপনার শখকে একটি ব্যবসায় পরিণত করা সম্ভব। কম খরচে লাভের ব্যবসা হবে।
বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের জন্য কাস্টমাইজড কেক। আপনি অনলাইন বা অফলাইনে দুইভাবেই এই ব্যবসা করতে পারেন, সামগ্রী ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারলে ব্রিক্রি বাড়বে।
২৩. ফটোগ্রাফি (Photography) :-
ডিজিটাল প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে, ফটোগ্রাফি ব্যবসা অনেক সহজ এবং আরও জমজমাট হয়ে উঠেছে। ষ্টুডিও বা ডার্করুমের আর কোনও প্রয়োজন নেই। একটি ভাল ডিএসএলআর (DSLR ) ক্যামেরা এবং একটি কম্পিউটার থাকলেতবেই এই ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহ থেকে কর্পোরেট ইভেন্ট, যে কোনও ইভেন্টে ফোটোগ্রাফি করে ভালো পরিমান আয় করা যেতে পারে।
প্রথমত, আপনাকে ক্রেতার পছন্দ এবং চাহিদা বুঝতে হবে এবং সেই মতো ছবি তুলতে হবে। ব্যবসার শুরুতে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করুন, এতে ব্যবসা পাওয়া সহজ হবে। আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো অনেক সহজ হয়ে উঠবে। ছোট ইভেন্ট গুলি দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সংস্থার পণ্য বা মডেল শ্যুটের জন্যও ডাক পেতে পারেন।
আরও পড়ুন - বাড়িতে বসেই ৭ দিনের মধ্যে ওজন কমান ৩ টি সহজ উপায়ে।
২৪. ডে কেয়ার সেন্টার (Day Care Centre) :-
এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই কোনো কাজ বা চাকরি করে জন্য তারা তাদের ছোট ছেলে-মেয়েদের দিনের বেলা সময় দিতে বা দেখাশোনা করতে পারে না। তাই সেই সময় শিশুটিকে দেখভাল করার জন্য ডে কেয়ার সেন্টারের প্রয়োজন। আপনি যদি বাচ্চাদের ভালবাসেন এবং তাদের যত্ন নিতে পছন্দ করেন তবে আপনি খুব অল্প পরিমান অর্থেই একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এটির জন্য প্রয়োজন কিছু জায়গা, তা আপনার নিজের বাড়িতে হোক বা অন্য কোনও ভাড়া নেওয়া জায়গায়। বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদের কথা মাথায় রেখে কিছু খেলনা কিনুন এবং বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রাখুন।
তবে এই ব্যবসায় মহিলাদের উপস্থিতি অপরিহার্য। শুধুমাত্র পুরুষদের পক্ষে এই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়, বাচ্চাদের পিতামাতারা সর্বদা মহিলাদের উপস্থিতি চাইবেন কারণ একজন পুরুষের থেকে একজন মহিলা একটি শিশুর দেখাশোনা বেশি ভালো করে করতে পারে।
এই ব্যবসা করতে, আপনাকে ধৈর্যশীল, মনোযোগী এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। আপনাকে বাচ্চাদের মন বুঝতে হবে। পিতামাতারা আপনার ওপর তাদের সন্তানদের সম্পূর্ণ দায়িত্বে রেখে যাবেন, তাই তাদের ভরসা এবং বিশ্বাস অর্জন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
২৫. ইন্টিরিয়র ডেকরেশন (Interior Decoration) :-
অফিস হোক বা সুসজ্জিত ফ্ল্যাট বা বাড়ি, অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা সর্বত্র প্রয়োজন। আপনি যদি গ্রাহকের স্বাদ অনুযায়ী তাদের বাড়ি দক্ষতার সাথে সাজিয়ে দিতে পারেন তবে আপনি অল্প পরিশ্রম ও অর্থেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
এই বিষয়ে আপনি একদম অজ্ঞ হলে আপনি কোনো পেইড কোর্সে যোগদান করতে পারেন, কিন্তু আপনি যদি এই কাজ আগে থেকেই পারেন তবে দক্ষতা এবং ক্রিয়েটিভ পাওয়ার (Creative Power) দিয়ে ক্রেতাকে খুশি করলে কাজের কোনও অভাব হবে না। অফিস, বাড়ি, দোকান, রেস্টুরেন্ট, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত অভ্যন্তরীণ সজ্জার প্রয়োজন পরে, আর এর জন্য টেন্ডার ডেকে কাজ দেওয়া হয়। আপনি যদি তাদের একটি উপযুক্ত প্রস্তাব দেন তবে আপনি কাজের জন্য ডাক পাবেন।
ব্যবসা শুরু করার আগে প্রয়োজনীয় হোমওয়ার্ক সম্পূর্ণ করুন। দক্ষ রাজমিস্ত্রিদের সাথে যোগাযোগ তৈরি করুন যাতে আপনি কাজ পেলে সহজেই আকর্ষণীয় কাজ করতে পারেন।
আরও পড়ুন - অনলাইনে টাকা ইনকাম করার ২২ টি সহজ ও কার্যকর উপায়।[Earn Money Online in Bengali]
২৬. কাগজের ব্যাগ তৈরি :-
পরিবেশ সচেতনতা বাড়ার সাথে সাথে কাগজের ব্যাগের ব্যবহার বাড়ছে। ক্ষতিকারক প্রভাবের কারণে আমাদের দেশের অনেক জায়গায় প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। এছাড়া অনেক দোকানে এখন প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাগজের ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে। এই ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে কাগজের ব্যাগ তৈরি এবং সরবরাহ করতে পারেন।
বিভিন্ন আকারের ব্যাগ তৈরি করুন, নকশায় প্রচুর নতুনত্ব আনুন। এমনকি আপনি পুরানো সংবাদপত্র দিয়েও ব্যাগ তৈরি করতে পারেন।
২৭. কাগজের কাপ, প্লেট তৈরি :-
পরিবেশ সচেতনতার কারণেই থের্মোকল বা প্লাস্টিকের কাপ-প্লেটের জায়গায় কাগজের বা পাতার কাপ-প্লেটের ব্যবহার বাড়ছে। আপনি পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাগজ থেকে কাপ প্লেট তৈরি করতে পারেন। আপনি যদি এই ব্যবসা শুরু করেন, আপনাকে কাগজের কাপ প্লেট তৈরির মেশিন কিনতে করতে হবে। কাপ মেশিনের দাম শুরু হচ্ছে ৬ লক্ষ টাকা থেকে। কিন্তু আমাদের দেশে অনুষ্ঠান যেমন প্রচুর তেমনি কাপ-প্লেটের চাহিদাও অসীম, তাই এই ব্যবসা শক্ত হাতে ধরলে লাভ নিশ্চিত।
আরও পড়ুন - স্ত্রী কে যৌনতায় সন্তুষ্টির উপায় জানা নেই, তাই বাড়ছে পরকীয়া।জানুন স্ত্রীকে খুশি রাখার উপায়।
২৮. গুঁড়ো মশলা তৈরি ও প্যাকেটজাতকরণ :-
মশলা ছাড়া যেন আমাদের খাবারে স্বাদ এ আসে না। সাধারণ ডাল থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি সব ধরণের খাবার তৈরিতেই দরকার বিভিন্ন মসলার গুঁড়ো। তাই এই বাজারে উচ্চ মানের গুঁড়ো মশলা প্যাকেট করে বিক্রি করা ভাল লাভ দিতে পারে। আজকের ব্যস্ত যুগে, কেউ মশলা বাটার ঝামেলা করতে চায় না, তাই প্যাকেজড (Packaged) মশলার চাহিদা বিশাল।
মশলা তৈরির কারখানাগুলির জন্যখুব বেশি জায়গা লাগে না। আপনি একটি ছোট ঘর থেকেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনাকে মসলা গুঁড়ো করার মেশিন বা স্পাইস পাউডার মেশিন কিনতে হবে।
ছোট মেশিনগুলি প্রতি ঘন্টায় ১৮ কেজি থেকে ২৫ কেজি মশলা গুঁড়ো করতে পারে, এবং বড় মেশিনগুলি প্রতি ঘন্টায় ৪৫ কেজি থেকে ৫৫ কেজি মশলা উৎপাদন করে। ছোট মেশিন গুলি ৫০-৫৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, আর বোরো মেশিনগুলি 1 লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয়।
২৯. আদা-রসুনের পেস্ট তৈরি :-
অদা ও রসুন বাটা যে কোনো তরকারিতে একটি আলাদাই সুগন্ধ ও স্বাদ এনে দেয়। এই কারণে গুঁড়ো মশলার পাশাপাশি আদা ও রসুন বাটা-র চাহিদা বাড়ছে। রান্না করার সময় আদা এবং রসুন আলাদা করে না বেটে, অনেকে বাজার থেকে আনা প্যাকেট পেস্টের উপর নির্ভর করে।
আদা-রসুন বাটা তৈরি করতে ওয়াটার জেট ওয়াশার, স্কিন পিলিং মেশিন, ক্রাশার মেশিন এবং প্যাম্পিং মেশিনেই দরকার। প্যাকেজিং খরচও আছে। এই পেস্টটি সাধারণত রসুনের তিন অংশের সাথে আদার দুই অংশ মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এটিকে দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষন করার জন্য প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষক মেশাতে হয়। তেল, হলুদ এবং ভিনেগার সংরক্ষক হিসাবে যোগ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন - সুস্থ দাম্পত্য জীবন এর সমাধান - ব্যবহার করবেন বায়োমেনিক্স প্লাস
৩০. পটেটো চিপস্ তৈরি :-
খুব কম মূলধনে এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। অনেক বহুজাতিক সংস্থা বাজারে আলুর চিপস উপলব্ধ তবে স্থানীয় দোকানগুলিতে এখনও এই চিপস গুলির চাহিদা রয়েছে।
৩১. বড় দোকানে স্থানীয় জিনিস সরবরাহ :-
রিলায়েন্স ফ্রেশ, মোর ইত্যাদি মেগাস্টোরগুলিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত টাটকা ফল, শাকসবজি, খোলা মশলা ইত্যাদি সরবরাহ করতে পারেন। কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে পণ্য সংগ্রহ করে এই সব বড় বড় দোকান বা মেগাস্টোর গুলিতে বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন। এর জন্য কৃষক ও মেগাস্টোরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে খুব বেশি বিনিয়োগ না করেও ভালো লাভ পাবেন।
৩২. ডেলিভারি বয় বা সিকিউরিটি গার্ডের এজেন্সি :-
ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন বা জোম্যাটো, সুইগির মতো খাদ্য ও বিভিন্ন পণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স সংস্থাগুলির সর্বত্র ডেলিভারি বয় প্রয়োজন। এছাড়াও, বড় বড় কোম্পানি বা এপার্টমেন্টগুলি বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সি থেকে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করে থাকে। এই দুটি ক্ষেত্রেই বিশ্বাসযোগ্যতাই হল মূল বিষয়। আপনার স্থানীয় ছেলেদেরই আপনি নিয়োগ করতে পারেন এই এজেন্সির মাধ্যমে। এতে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানও হবে, আপনিও লাভ করতে পারবেন নিয়মিত। যে সংস্থাগুলি এই জাতীয় কর্মচারী নিয়োগ করে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।
আরও পড়ুন - চুল পড়ার কারণ সহ সহজ সমাধান - Hair Fall Solution Tips in Bengali
৩৩. পুরনো জিনিসের দোকান :-
পুরানো পণ্যের দোকানগুলি বাইরের বিভিন্ন দেশে বেশ জনপ্রিয় তবে এটি আমাদের দেশে এখনো অতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। তবে পুরোনো পোশাকের চাহিদা না থাকলেও পুরনো ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন সামগ্রী কিনতে আগ্রহী অনেকেই। অন্যদিকে পুরনো জিনিসে বিক্রেতা তার অপ্রয়োজনীয় জিনিস অনেক সময়েই খুব কম দামে বিক্রি করে দিতে চান। পুরনো জিনিস সংগ্রহ করে বা কিনে নিয়ে তা বিক্রি করতে পারেন বেশি দামে। জিনিসগুলি পুরোনো হলেও জিনিসগুলি যত ভালো অবস্থায় থাকবে আপনার লাভের পরিমান ততই বেশি হবে।
৩৪. ডায়াগনসিস্ সেন্টার :-
আপনার এলাকায় ডায়াগনস্টিক টেস্ট পরিষেবা না থাকলে, আপনি এই ব্যবসার কথা ভাবতে পারেন। যখনই আপনি শহরে যান এবং একটি ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করান, এটি ব্যয়-সাপেক্ষ এবং কঠোর পরিশ্রমেরে। থাইরয়েড, ডায়াবেটিসের মতো রোগের জন্য রোগীদের নিয়মিত ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা করাতে হয়। আর এখনকার দিনে ৪৫ বছরের বেশি বয়সের লোকেদের প্যায় বেশিরভাগই এই সব রোগে ভোগেন।
৩৫. প্রি-স্কুল ফ্র্যাঞ্চাইজি :-
ক্ষুদে পড়ুয়াদের জন্য তৈরি প্রি স্কুল বা প্লে স্কুলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মাঝারি ও ছোট শহরে নিজেদের ফ্র্যাঞ্চাইজি খুলতে আগ্রহী হচ্ছে কিডজি বা ট্রিহাউজের মতো প্রি স্কুল চেইনগুলো। প্রি স্কুলের ফ্র্যাঞ্চাইজি খোলার সুবিধা হল সংশ্লিষ্ট সংস্থার থেকেই নানা ধরনের সাহায্য পাওয়া যাবে।
শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ, তাঁদের প্রশিক্ষণ, প্রচার ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তারা সহায়তা করতে হবে। আপনাকে জায়গা, অন্দরসজ্জা, আসবাব, বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। ১৫০০০ স্ক্যোয়্যার ফুটের একটি জায়গা পেলে ভাল হয়। সব মিলিয়ে তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা মতো বিনিয়োগ করতে হবে এই ব্যবসায়।
আরও পড়ুন - মুখের মেছতা দূর করার উপায়






























